খানসামায় শিশু পার্কের উদ্বোধন

মোঃ জসিম উদ্দিন; খানসামা (দিনাজপুর)প্রতিনিধি

 

আজকের শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে তাদের নিয়ে নানা পরিক্রমা হাতে নিতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের খেলাধুলা ও বিনোদনে মনোযোগী হতে হবে। এ জন্য তাদের দরকার একটি পার্ক। এ ধারণাকে সামনে এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে খানসামা উপজেলা পরিষদ চত্বরে গড়ে তুলেছে ‘খানসামা শিশু পার্ক’ নামে একটি শিশু পার্ক।
আজ ৯ জুন বুধবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নির্মিত শিশু পার্ক এর ভার্চুয়ালী উদ্বোধন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি। সরেজমিনে পার্কে ঘুরে দেখা যায়, এই শিশু পার্কে শিশুদের সুস্থ বিনোদনের জন্য বিভিন্ন খেলনার পাশাপাশি মেধা বিকাশের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখির ম্যুরাল। এতে শিশু ও দর্শনার্থীরা শুধু বিনোদন ও ভ্রমণ নয় হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন পশু-পাখির ছবির সাথে পরিচিত ও শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারবেন। পার্কে প্রবেশের সময় শিল্পী ও ফটোগ্রাফারের ম্যুরাল আগতদের ছবি তুলছে আর সম্ভোধন জানাচ্ছে। পার্কের মাঝে ২টি হরিণ দাঁড়িয়ে আছে আর তাদের ১টি বাচ্ছা ঘাস খাচ্ছে। তার পূর্বে ৫টি বক দিয়ে নির্মিত বক চত্বরেই পানির মধ্যেই ভাসমান আছে কুমিড়ের ম্যুরাল আর এর পার্শ্বে রয়েল বেঙ্গল টাইগার মুখ হা করে হরিণের দিকে তাকিয়ে আছে। পশ্চিম-উত্তর দিকে আড়াআড়িভাবে সাজানো রয়েছে পাহারাদার, হাতি, জিরাফ, ঘোড়া, প্রজাপতি ও সিংহের ম্যুরাল। উত্তর-পূর্ব দিকে উড়ন্ত অবস্থায় ঈগল পাখি, বসানো অবস্থায় উটপাখি ও ছবি তোলার জন্য নির্মিত রাস্তার দু’পাশে দুটি পেঙ্গুইন। তার সামনে রযেছে ময়না, শালিক, ডাহুক পাখি ও নৃত্য অবস্থায় দুটি ডলফিন। আর পূর্ব দিকে মুখোমুখি অবস্থানে ড্রাগন ও ডাইনোসর আর মাঝে একটি মোরগ। তার পার্শ্বে কুনোব্যাঙ ও কচ্ছপ। তাদের সামনে কলা খাওয়া অবস্থায় বানর ও স্যালুট অবস্থানে গরিলা। বানর ও গরিলার দক্ষিণ পার্শ্বে আড়াআড়িভাবে ৩টি জেব্রা। পূর্ব-দক্ষিণ হয়ে পশ্চিমের দিকে গাছের নিচে সাজানো মুখোমুখি অবস্থানে সাদা ও লালচে কালারের ৪টি সারোস , ডালের নিচে বসা ৪টি টিয়া পাখি,পাখা মেলে বসে আছে ২টি ময়ূর, ১টি হাঁসের কার্টুনের বাদ্যযন্ত্র বাঁজানোর তালে তালে নাচ অবস্থায় ২টি হাঁসের কার্টুন, জাতীয় পাখি দোয়েল ও বড় হাতির মুখের দিকে তাকিয়ে ছোট হাতির বাচ্ছা। আর পার্কের মাঝে মোটু ও পাতলু স্টাইলে দাঁড়িয়ে ও তার পাশে ক্যাঙ্গারু ও কাঁঠবিড়ালি।পশু-পাখির সমারোহ ছাড়াও শিশুদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে দোলনা, রাউন্ড দোলনা, ঘোড়া রাউন্ড দোলনা, স্লিপার। ঘুরার জন্য রয়েছে সৌন্দর্যময় টাইলসের রাস্তা। আর বসার জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর টাইলস দিয়ে নির্মিত বেঞ্চ।উদ্বোধনের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, ভেড়ভেড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ সরকার, খানসামা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।পার্কে ঘুরতে আসা নওশিন তাবাসসুম নামে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রী বলেন, শিশু পার্কে অনেক প্রকার প্রাণী ও খেলনার কারনে অনেক ভালোই লাগে। তাই প্রায়ই পার্কে এসে খেলাধুলা করি।উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, মূলত শিশুদের শারিরীক ও মানষিক বিকাশের জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ধরনের একটি পার্ক তৈরির উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। এ শিশু পার্কে বিভিন্ন প্রাণীর ম্যুরাল ও রাইড স্থাপন করা হয়েছে। এতে উপজেলার বিভিন্র প্রান্ত থেকে শিশুরা আগমন করে সুন্দর সময় কাটাতে পারবে। তাদের শারিরীক ও মানষিক বিকাশে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরে আগত সেবাগ্রহীতারাও অবসর সময় কাটাতে পারবে ও প্রশান্তি অনুভব করতে পারবে বলে আশা করি।